Header Ads

Header ADS

আলী (রা) হত্যাকাণ্ড



 আলী ইবনে আবি তালিবকে, ইসলামে চতুর্থ খোলাফায়ে রাশেদীন, ইবনে মুলজিম নামে একজন খারেজী ৬৬১ সালের ২৬ জানুয়ারীতে বর্তমান ইরাকে অবস্থিত কুফার শাহী মসজিদে হত্যা্ করেন। ্৪০ হিজরীর ২১ (বা ১৯) রমজান (২৮ জানুয়ারী ৬৬১ খ্রিস্টাব্দ) এ ইবনে মুজলিম বিষাক্ত বিষে মাখা একটি তলোয়ার দিয়ে হযরত আলীর মাথায় আঘাত করেন এবং এই আঘাতের কারণেই ঘটনার দুইদিন পর ৬২ বা ৬৩ বছর বয়সে হযরত আলী শাহাদাত বরণ করেন।[১] হযরত উমর ও হযরত উসমানের পর তৃতীয় খলিফা হিসেবে তিনি হত্যাকান্ডের শিকার হন।

৬৫৬ খ্রীস্টাব্দে হযরত উসমানের হত্যাকান্ডের পর হযরত আলী খলিফা হিসেবে নিযুক্ত পান। খলিফা হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই মুয়াবিয়া ১ সহ বিভিন্ন গোত্র তার বিরোধিতা করতে থাকে। ইসলামী শাসনের প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম ফিৎনা নামে একটি সামরিক যুদ্ধ সংগঠিত হয় যা খোলাফায়ে রাশেদীনদের শাসনের ইতি ঘটায় এবং উমাইয়া শাসনের গোড়াপত্তন ঘটায়। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে খলিফা উসমান ইবনে আফফানের হত্যাকান্ডের পর এটি শুরু হয় এবং হযরত আলীর খেলাফতের চার বছরকাল ধরে যুদ্ধটি চলতে থাকে। সিফফিনের যুদ্ধে (৬৫৭) হযরত আলী মুয়াবিয়া ১ এর সাথে মধ্যস্থতা করতে রাজী হলে তারর দলের কিছু সৈন্য তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে, পরবর্তীতে তারা খারেজী (যারা আলীকে ত্যাগ করেছিল) হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। তারা হযরত আলীর কিছু সমর্থককে হত্যা করে, তবে ৬৫৮ খ্রিস্টাব্দের জুলাইয়ে সংগঠিত নাহরাওয়ান যুদ্ধে আলীর সৈন্যরা তাদের ধ্বংস করে দেয় ।[২]:২৬০-২৬১

ইবনে মুজলাম মক্কায় আল-বুরাক ইবনে আব্দ আল্লাহ এবং আমর ইবনে বকর আল-তামিমি নামক অন্য দুইজন খারেজীর সাথে সাক্ষাত করে এবং তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে মুসলমানদের দুর্দশার জন্য আলী, মুয়াবিয়া এবং আমর ইবনে আস্ই, মিশরের শাসনকর্তা, দায়ী। নাহরাওয়ান যুদ্ধে তাদের সঙ্গীদের মৃত্যুর প্রতিশোধ এবং সে সময়কার শোচনীয় অবস্থা নিরসনের জন্য তারা এই তিনজনকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। হযরত আলীকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে ইবনে মুলজাম কুফার পথে রওনা হন। সেখানে তিনি এক মহিলার প্রেমে পড়েন যার পিতা এবং ভাই নাহরাওয়ান যুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন। মহিলাটি এই শর্তে বিয়ে করতে রাজী হয় যে যদি সে আলী হত্যা করতে পারে তাহলেই সে ইবনে মুজলামকে বিয়ে করবে। ফলস্বরূপ, কুফা শাহী মসজিদে ইবনে মুজলাম হযরত আলীকে ছুরিকাঘাত করেন। হযরত আলীর শাহাদাতের পর, হাসান ইবনে আলী ইবনে মুজলামকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করেন।

হযরত মুহাম্মদ (দঃ), ইসলাম ধর্মের শেষ নবী ও রসুল, এর ওফাতের পর মুসলিম সাম্রাজ্য মুহাম্মদের উত্তারাধিকারী নির্বাচনে নিজেদের মধ্যে পৃথক হয়ে পড়ে। হযরত আলীর হত্যাকান্ডের পিছনে এটি অন্যতম নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছিল। বানি সাইদার মজলিশ আবু বকরকে খলিফা হিসেবে নির্বাচিত করেন।[২]:৩০–৩২ খেলাফত নিয়ে বিভিন্নমত রয়েছে। কেউ মনে করেন হযরত মুহাম্মদ (দঃ) খেলাফতের জন্য কোন ব্যক্তিকে মনোনীত করে যাননি।আরেকটি মতানুসারে গদীরখুমের ভাষণে হযরত মুহাম্মদ (দঃ) হযরত আলীকে তার উত্তারাধিকারী (আধ্যাত্বিক প্রতিনিধি) হিসেবে মনোনীত করেন।[৪]:৪৩-৪৮[৫]:১৯৩-১৯৪ পরেরটি অনেক বেশী গ্রহণযোগ্য হয়েছে। কারণ হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এরশাদ করেন,

    আমি যার মওলা আলীও তার মওলা।

তিনি আরো এরশাদ করেন

    আমি জ্ঞানের শহর, আলী ঐ শহরের দরজা।

আবু বকরের মৃত্যুর পর উমর খলিফা হিসেবে নির্বাচিত হন। ৬৪ বছর বয়সে উমর এক আততায়ির হাতে মুত্যুবরণ করেন। উমরের মুত্যুর পর আলী, হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর চাচাত ভাই এবং জামাতা, এবং উসমান খেলাফতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। উসমান একটি নির্বাচক পরিষদের ভোটে খলিফা হিসেবে নিযুক্ত হন। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে উসমানের হত্যাকান্ডের পর হযরত আলী খলিফা হিসেবে নিযুক্ত হন।[৫]:২০৩-২০৪ আলীর খেলাফত আবু বকরের মৃত্যুর পর উমর খলিফা হিসেবে নির্বাচিত হন। ৬৪ বছর বয়সে উমর এক আততায়ির হাতে মুত্যুবরণ করেন। উমরের মুত্যুর পর আলী, হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর চাচাত ভাই এবং জামাতা, এবং উসমান খেলাফতে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। উসমান একটি নির্বাচক পরিষদের ভোটে খলিফা হিসেবে নিযুক্ত হন। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে উসমানের হত্যাকান্ডের পর হযরত আলী খলিফা হিসেবে নিযুক্ত হন।[৫]:২০৩-২০৪

আলীর খেলাফত আর প্রথম ফিতনা সমসাময়িক ছিল।[৬] উসমানের মৃত্যুর পাঁচ দিন পর হযরত আলী যদিও চতুর্থ রশিদুন (সঠিক পথপ্রদর্শক) হিসেবে নির্বাচিত হন, তিনি তার শাসনামলে প্রচুর বিরোধীতার সম্মুখীন হন। একদিকে মক্কাতে হযরত আয়শা, তালহা এবং আল-যুবায়ের তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে এবং অন্যদিকে মুয়াবিয়া, পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের উমাইয়া শাসক, আলীকে নতুন খলিফা হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। ফলস্বরূপ খেলাফত লাভের জন্য একটি সামরিক যুদ্ধ সংগঠিত হয়। হযরত আলীর বিরোধিরা উসমানের হত্যাকারীদের শাস্তির জোর দাবি করেছিল। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে সংগঠিত উষ্ট্রের যুদ্ধে হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর সহধর্মিনী হযরত বিবি আয়শা এবং অন্যান্য সাহাবাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে বাধ্য হন এবং যুদ্ধে জয়লাভ করেন। এরপর, ৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে হযরত আলী মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে সিফফিনের যুদ্ধে অবর্তীণ হন। মুয়াবিয়ার সাথে হযরত আলীর একটি চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধটির অবসান ঘটে।[৫]:২০৩-২০৪ আর প্রথম ফিতনা সমসাময়িক ছিল।[৬] উসমানের মৃত্যুর পাঁচ দিন পর হযরত আলী যদিও চতুর্থ রশিদুন (সঠিক পথপ্রদর্শক) হিসেবে নির্বাচিত হন, তিনি তার শাসনামলে প্রচুর বিরোধীতার সম্মুখীন হন।

একদিকে মক্কাতে হযরত আয়শা, তালহা এবং আল-যুবায়ের তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে এবং অন্যদিকে মুয়াবিয়া, পূর্ব-ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের উমাইয়া শাসক, আলীকে নতুন খলিফা হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানান। ফলস্বরূপ খেলাফত লাভের জন্য একটি সামরিক যুদ্ধ সংগঠিত হয়। হযরত আলীর বিরোধিরা উসমানের হত্যাকারীদের শাস্তির জোর দাবি করেছিল। ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দে সংগঠিত উষ্ট্রের যুদ্ধে হযরত মুহাম্মদ (দঃ) এর সহধর্মিনী হযরত বিবি আয়শা এবং অন্যান্য সাহাবাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরতে বাধ্য হন এবং যুদ্ধে জয়লাভ করেন। এরপর, ৬৫৭ খ্রিস্টাব্দে হযরত আলী মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে সিফফিনের যুদ্ধে অবর্তীণ হন। মুয়াবিয়ার সাথে হযরত আলীর একটি চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধটির অবসান ঘটে।[৫]:২০৩-২০৪

হযরত আলীর দলের একদল সৈন্য, পরবর্তীতে যারা খারেজী বা খাওয়ারিজ (যারা আলীকে ত্যাগ করেছিল) হিসেবে পরিচিতি লাভ করে, সিফফিনের যুদ্ধে মুয়াবিয়ার সাথে স্বাক্ষরিত চুক্তির বিরোধিতা করতে থাকে। তারা ধর্মের ব্যাপারে মানুষের বিচারের বিরোধিতা করে এবং "বিচার শুধুমাত্রই আল্লাহর একার" এই স্লোগানটি প্রচার করতে থাকে।[৭]:৩৯০ ৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে তারা তাদের চুক্তির শপথ ভঙ্গ করে, বিদ্রোহ শুরু করে এবং জনসম্মুখে হুমকি দিতে থাকে যে যারা তাদের সাথে যোগদান করবে না তারা তাদেরকে হত্যা করবে। হযরত আলী তাদেরকে নাহরাওয়ান যুদ্ধে পরাজিত করেন। খারেজীদের হত্যাকান্ড ছিল হযরত আলীর খেলাফতের সবচেয়ে সমস্যাপূর্ণ ঘটনা, কারণ মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে সংহঠিত যুদ্ধে খারেজিরা বলিষ্ঠভাবে অংশগ্রহণ করে।[২]:২৬১ ইবনে মুজলাম অন্য দুই খারেজী, আল বুরাক ইবনে আব্দ আল্লাহ এবং আমর ইবনে বকর আল-তামিমি, যারা প্রত্যেকেই কিন্দার অধিবাসী ছিলেন বলে মনে করা হয়, মক্কায় স্বাক্ষাত করেন এবং হজ্বব্রতের শেষে তারা একটি দীর্ঘ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। তারা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, মুসলিম সাম্রাজ্যের এই পরিস্থিতির জন্য হযরত আলী, মুয়াবিয়া এবং আমর ইবনে আস্ই, মিশরের শাসনকর্তা, দায়ী এবং নাহরাওয়ান যুদ্ধে তাদের সঙ্গীদের মৃত্যুর প্রতিশোধ হিসেবে তাদেরকে হত্যা করার জন্য তাদের বিরুদ্ধে তলোয়ার উঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তারা হত্যাকান্ডের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন এবং পছন্দ অনুযায়ী প্রত্যেকে তাদের শত্রুকে বেছে নেয়।

No comments

Powered by Blogger.